দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজননক্ষেত্র হালদা নদীতে নমুনা ডিম ছেড়েছে মা মাছ। বৃহস্পতিবার দিবাগত মধ্যরাতে হালদা নদীর কয়েকটি স্পটে নমুনা ডিম ছাড়ে কার্প জাতীয় মা মাছ।
বৃহস্পতিবার (২১ মে) রাত ১২টার পর থেকে জোয়ারে হালদায় মা মাছ নমুনা ডিম ছেড়েছে বলে জেলেরা জানিয়েছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন গণমাধ্যমকে বলেন, হালদা নদীর কাগতিয়ার মুখ থেকে গড়দুয়ারা নয়াহাট পর্যন্ত বিভিন্ন নৌকার ডিম সংগ্রহকারীরা জানাচ্ছেন, তারা প্রতি জালে ১০০-১৫০ গ্রাম পর্যন্ত ডিম পাচ্ছেন, তাদের ভাষ্যমতে এগুলো নমুনা ডিম।
রুহুল আমিন বলেন, ডিম সংগ্রহকারীরা যাতে ভালো ডিম সংগ্রহ করতে পারেন এজন্য মা মাছ সংরক্ষণের উপর জোর দিই। ইঞ্জিন চালিত নৌকা জব্দ, নিষিদ্ধ জাল ধ্বংসসহ হালদার দূষণ কমাতে নিয়মিত অভিযান চালাই। ডিম থেকে রেণু তৈরির কুয়াগুলো সংস্কারের উদ্যোগ নিই। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের ব্যবস্থা করি।
এবার হালদার মা মাছ রক্ষায় গত কয়েক মাসে ব্যাপক অভিযান চালিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। মাছের ডিম থেকে রেণু তৈরির কুয়াগুলো সংস্কারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সব মিলিয়ে এবার রেকর্ড ডিম সংগ্রহে আশা করা হচ্ছে।
স্থানীয় জেলেরা জানান, বুধবার (২০ মে) রাতে বৃষ্টিতে পুরোদমে ডিম ছাড়ার অনুকূল পরিবেশ ছিল। এরপরও এদিন মা মাছ ডিম ছাড়েনি। তবে অনুকূল পরিবেশ তৈরি হলে শিগগিরই মা মাছগুলো পুরোদমে ডিম ছাড়বে।
স্থানীয়রা জানান, এবার মা মাছ রক্ষায় হালদা নদীতে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করায় ডিম সংগ্রহ গতবারের চেয়ে বেশি হতে পারে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, সাধারণত চৈত্র থেকে বৈশাখ মাসে অমাবশ্যা, পূর্ণিমা ও অষ্টমী তিথিতে প্রবল পাহাড়ি ঢল ও শীতল আবহাওয়ায় কার্প জাতীয় মাছ নদীতে ডিম ছাড়ে। নমুনা ডিম মা মাছের প্রাকৃতিক প্রজননের জন্য প্রস্তুতের আভাস।
মাছ আগে নমুনা ডিম ছেড়ে পরীক্ষা করে নদীতে ডিম ছাড়ার অনুকূল পরিবেশ আছে কিনা। অনুকূল পরিবেশ তৈরি হলেই মা মাছ ডিম ছাড়বে। পাহাড়ি ঢল, ব্রজসহ বৃষ্টি, ঠাণ্ডা আবহাওয়া, পূর্ণিমা, অমবশ্যার তিথিতে মূলত মা মাছ ডিম ছাড়ে, এখন সে ধরনের অনুকূল পরিবেশ আছে।
হালদা থেকে গত বছর ১০ হাজার ২০০ কেজি ডিম সংগ্রহ করা হয়েছিল। এর আগে ২০১৮ সালে ২২ হাজার ৬৮০ কেজি, ২০১৭ সালে ১ হাজার ৬৮০ কেজি, ২০১৬ সালে ৭৩৫ (নমুনা ডিম) কেজি, ২০১৫ সালে ২ হাজার ৮০০ কেজি এবং ২০১৪ সালে ১৬ হাজার ৫০০ কেজি ডিম সংগ্রহ করা হয়।