ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার একটি গ্রামে আট হিন্দু বাড়িতে হামলা ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে।
রবিবার (৩১ জুলাই) রাতে উপজেলার ৮ নং ধলহরাচন্দ্র ইউনিয়নের কামারিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
শৈলকুপা থানার ওসি আমিনুল ইসলাম জানান, রবিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার কামারিয়া গ্রামে ওই হামলার ঘটনায় অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন।
পুলিশ বলছে, কামারিয়া গ্রামের সব পরিবারই হিন্দু সম্প্রদায়ের। দিন সাতেক আগে পাশের বগুড়া গ্রাম থেকে জন বিশেক লোক এসে ঘোরাঘুরি করলে কামারিয়া গ্রামের মানুষ থানায় খবর দেয়। পরে পুলিশ গিয়ে তাদের এলাকা থেকে সরিয়ে দেয়।
এর জের ধরে রবিবার রাতে আবার কামারিয়া গ্রামে হামলা চালানো হয় বলে ওসি আমিনুলের ভাষ্য।
তিনি বলেন, বগুড়া এলাকা থেকে ৪০-৫০ জন সন্ত্রাসী গিয়ে বেছে বেছে আটটি হিন্দু বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে। তাদের মারধরে নারীসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। পরে তাদের উদ্ধার করে শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
হামলার শিকার কামারিয়া গ্রামের সন্ধ্যা রানী বলেন, সন্ত্রাসীরা আমার ছেলের দোকানে ভাঙচুর করেছে, মালামাল লুট করে। আমার ছেলেকে পিটিয়ে আহত করেছে।
হামলার সময় গ্রামের মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিল জানিয়ে ভুক্তভোগী শিখা রানী বলেন, মাঝে মধ্যে বাইরের গ্রাম থেকে সন্ত্রাসীরা এসে চাঁদা চাইত।
ওই গ্রামের সুনীল মণ্ডল, দীপক মণ্ডল, ভরত মণ্ডল, জ্ঞানেন্দ্র মণ্ডল, উত্তম বাইন, সজল বারই, দেব কুমার ও বিকাশ কুমারের বাড়িতেও হামলা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও শৈলকুপা আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল হাই বলেন, হিন্দু বাড়িতে হামলা মেনে নেওয়া যায় না।
ধলহরাচন্দ্র ইউপি মেম্বার রতন কুন্ডু বলেন, পাশ্ববর্তী ইউনিয়নের ফরিদ মুন্সীর নেতৃত্বে লোকজন এসে আমাদের বাড়ি ঘরে হামলা ও লুটপাট করে পালিয়ে যায়।
বগুড়া ইউপি মেম্বার ফরিদ মুন্সী বলেন, আমার নেতৃত্বে কামারিয়া গ্রামে কোন হামলা হয়নি। ওরা নিজেরা নিজেদের মধ্যে এঘটনা ঘটিয়ে আমার উপর দোষ চাপাচ্ছে। আমি এ ঘটনার সাতে জড়িত না।
ঝিনাইদহের পুলিশ সুপার মুনতাসিরুর ইসলাম বলেন, কয়েকদিন আগে কামারিয়া গ্রামে একটি মোটর সাইকেল চুরির ঘটনা নিয়ে বিরোধ হয় বলে শুনেছি। তবে এবার কি কারণে বাইরের গ্রাম থেকে আসা লোকজন হামলা করল, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা।
এ ব্যাপারে শৈলকুপা থানার ওসি আমিনুল ইসলাম বলেন, কামারিয়া গ্রামে হামলার ঘটনা ঘটেছে তবে এ ঘটনায় এখনো কোন মামলা হয়নি। ওখানে আমাদের পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এলাকার বর্তমান পরিস্থিতি শান্ত আছে।